কুবিতে ক্যারিয়ার সামিট অনুষ্ঠিত
আপডেট সময় :
০২-১২-২০২৪ ১১:৫৮:১৮ পূর্বাহ্ন
কুবিতে ক্যারিয়ার সামিট অনুষ্ঠিত
কুবি প্রতিনিধি
এক্সিলেন্স বাংলাদেশের সহায়তায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) স্কিল ডেভেলপমেন্ট ক্লাব ও কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি আইটি সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে 'কিরন প্রেজেন্টস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার সামিট-২০২৪'
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের কনফারেন্স রুমে হাসিন মাহতাব মাহিন ও হুরে জান্নাত অর্নার সঞ্চালনায় অতিথিদের বরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।
উক্ত আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান। প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতে এই আয়োজনে ৯ জন বক্তা সরাসরি এবং একজন ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন। একই সাথে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান এবং এক্সিলেন্স বাংলাদেশ এর সি ই ও বেনজির আবরার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন, গানচিল মিউজিক ও এএসআইএক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা আসিফ ইকবাল। শুরুতেই তিনি ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’ গানের মধ্যে দিয়ে তার বক্তব্য শুরু করে। বক্তব্যের বিষয় ছিলো মানসিক দক্ষতা। লক্ষ্য অর্জনে কী কী মানসিক বাধা আসতে পারে এবং কীভাবে বাধা অতিক্রম করে লক্ষ্য অর্জন করতে হবে তা তিনি বক্তব্যে তুলে ধরেন। সকল সন্দেহ পেছনে ফেলে ‘আমি পারবো' এই মনোবল নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ‘দেখা হবে বিজয়ে' গানের মধ্যে দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।
এরপর শীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য ১০ মিনিটের ভিডিও বার্তা প্রদান করেন The Daily Star এর প্রধান ব্যবসায়িক কর্মকর্তা তাজদীন হাসান। শুরুতেই তিনি উপস্থিত না হতে পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তার ১০ মিনিটের বক্তব্যর বিষয় ছিল "মিডিয়া ও মার্কেটিংয়ের ভবিষ্যৎ: সম্ভাবনা ও নতুন দিগন্ত "।
৩য় বক্তা ছিলেন, পারটেক্স গ্রুপের প্রধান ব্যবসায়িক কর্মকর্তা সৈয়দুল আজহার সারওয়ার। তিনি শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারের শুরুতেই নেতৃত্বের দক্ষতা বিকাশ করা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি তার বক্তব্যে একাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি যে গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে আলোকপাত করেন।
পরের বক্তব্যে একসাথে ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা মুনাফ মজিব চৌধুরী বলেন তার ক্যারিয়ার জার্নি নিয়ে, সাফল্যের মন্ত্র, আর ডিজিটাল দুনিয়ার অদেখা দিক গুলো নিয়ে। অডিয়েন্স দের মধ্য থেকে কয়েকজনকে স্টেজে এনে প্রবলেম সলভিং, ডিজাইন থিংকিং এর মাধ্যমে কিভাবে বিজনেস কনসেপ্ট গুলো চিন্তা করা যায়, তা নিয়ে অডিয়েন্স কে নতুন একটা পার্স্পেক্টিভ এ দেখতে উৎসাহ প্রদান করেন।
বিরতির পর শুরুতে বক্তৃতা রাখেন, হালিমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান টগর। নিজের ব্যক্তিজীবনের বিভিন্ন সংগ্রাম ও চড়াই-উতরাইয়ের ফলে কিভাবে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছেন সেই গল্প শোনান শিক্ষার্থীদের। এছাড়া, জীবনের সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে পরিশ্রম, অসীম ইচ্ছা এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমেই যে সফলতার শীর্ষে পৌঁছানো যায় এই ধরনের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
এরপর বক্তব্য রাখেন, গ্রামীন ড্যানোন ফুডস লিমিটেডের বিক্রয় ও বিপণন শাখার প্রধান, সুরায়া সিদ্দিকা। তিনি আলোচনা করেন কিভাবে আমরা একটা বিজ্ঞাপন বা প্রোডাক্ট এর সাথে কিভাবে ইমোশনালি এটাচড হই, কিভাবে একটা প্রোডাক্ট আমাদের জন্যে নস্টালজিয়া বা আবেগ এ পরিণত হতে পারে এবং কিভাবে রাইট মার্কেটিং ক্যাম্পেইন আর কোম্পানির মোটিভেশান এর উপর কোম্পানির সফলতা নির্ভর করে ইত্যাদি বিষয়ে।
এরপর বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান। এসময়ে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে সব কিছু আই টি নির্ভর। সেলস থেকে শুরু প্রতিটি সেক্টর অটোমেটেড৷ শিক্ষার্থীদের উচিৎ এসবের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদেরকে তৈরি করা। আজকের উপস্থিত সকল অতিথির বক্তব্য ও নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে নিজেদের জীবনে কাজে লাগানো৷
এছাড়াও তিনি বলেন, যখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ছিলো তখন তেমন পরিচিতি ছিলো না৷ কিন্তু এখন এমন ইভেন্টগুলোর মধ্য দিয়ে রেপুটেড নাম হয়ে উঠছে৷ আজকে উপস্থিত থাকা সকল সফল ব্যক্তিত্বরা আসছেন, চিনছেন, কথা বলে যাচ্ছেন৷ আশা করি আমরা এভাবেই এগিয়ে যাবো৷
পরের বক্তব্যে গ্রামীন ড্যানোন ফুডস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দীপেশ নাগ, দর্শকদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন কিভাবে ‘লিডারশীপ’ গুণাবলী নিজের মধ্যে আনা যায়। তাছাড়া তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো মানুষ শতভাগ খারাপ অথবা শতভাগ ভালো না। তাই আমরা যদি কারো অন্ধ ভক্ত হয়ে যাই, তখন শুধু তার ভালো দিকগুলোই আমাদের চোখে পড়বে। কিন্তু আমাদের উচিত তার কাছ থেকে ভালো আইডিয়াগুলো নিয়ে সেগুলোর ওপর কাজ করা। তাই কাউকে ইনডিভিজুয়াল গুরু না মেনে যার যে কোয়ালিটি আছে সেগুলো একত্রিত করে ফলপ্রসূ করাই লিডারশিপের কাজ।
অনুষ্ঠানের মূল অংশের শেষে ইভেন্ট চেয়ারম্যান মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী এবং কো-চেয়ারম্যান হুরে জান্নাত অর্না সকল আয়োজকদের শিক্ষার্থীদের সামনে পরিচয় করিয়ে দেন এবং সকলের হাতে শুভেচ্ছা স্বারক তুলে দেন। পরবর্তীতে সাংস্কৃতিক সংগঠন 'প্রতিবর্তন' কে সাথে নিয়ে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজনের মাধ্যমে ক্যারিয়ার সামিট ২০২৪ এর শুভ সমাপ্তি হয়।
একজন পার্টিসিপ্যান্ট কে আয়োজন নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, শুরুতে গুডিজ ব্যাগে এতগুলা জিনিস পাবো কখনো ভাবিনি, একেকজন স্পিকার একেকভাবে সাহস দিচ্ছেন আমি সব নোট করেছি, চেষ্টা করবো সব বাস্তবে ইমপ্লিমেন্ট করার।
এক্সিলেন্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও বেনজির আবরার বলেন, এক্সিলেন্স বাংলাদেশ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম যারা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার নিয়ে কাজ করে। এক্সিলেন্স বাংলাদেশ ৭ বছর ধরে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে জব ফেয়ার,ও ক্যারিয়ার ইভেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাথে যুক্ত৷ এক্সিলেন্স বাংলাদেশের কর্পোরেট নেটওয়ার্ক এর সহায়তায় এখন অব্দি প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী তাদের ক্যারিয়ারে উপকৃত হয়েছে৷ এবার প্রথমবারের মতো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সরাসরি কোন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছে, ভবিষ্যতে আমদা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এমন আরো আয়োজনে যুক্ত হবো।
প্রধান আয়োজক ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট ক্লাবের সভাপতি মো. মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আজকের আয়োজন নিয়ে তিনি যেমন সন্তুষ্ট তেমনি উপস্থিত সকল অতিথি এবং শ্রোতারাও সন্তুষ্ট। তিনি আরো বলেন, ক্যারিয়ার সামিট’ এর মতো এতো বড় একটি অনুষ্ঠান কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করতে পারা অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ ছিলো। আয়োজনটি সফল ভাবে সম্পূর্ণ করতে পারায় তিনি তার টিমের অন্যান্য সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং ভবিষ্যতেও যেন এই আয়োজন চলমান থাকে এই আশা ব্যক্ত করেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স